জাপানের টোকিওর হানেদা এয়ারপোর্টে অবতরণ করার সময় ৩শতাধিক প্যাসেঞ্জার বহনকারী একটি প্লেনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ৩৭৯ প্যাসেঞ্জারবাহী একটি এয়ারবাস অবতরনের সময় রানওয়েতে দাঁড়িয়ে থাকা কোস্টগার্ডের একটি বিমানের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হলে সাথে সাথেই এয়ারবাসটিতে আগুন লেগে যায় এবং কেবিনজুড়ে আগুনের শিখা ও ধোঁয়ায় ভরে ওঠে।
জাপানের টোকিওতে ৩শতাধিক প্যাসেঞ্জার বহনকারী একটি প্লেনে আগুন





ফ্লাইট ৫১৬-এর সব যাত্রীকের তৎক্ষণাৎ উদ্ধার করা গেলেও দুঃখজনকভাবে কোস্টগার্ড ত্রাণবাহী বিমানটির ৫ জন ক্রু নিহত এবং বিমানের পাইলট মারাত্বকভাবে আহত হন। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদেরকে সহযোগিতার জন্য বিমানটি রানওয়েতে টেকঅফের অপেক্ষা করছিল। বিশেষজ্ঞরা জানান, উন্নত প্রযুক্তি ও দ্রুত পরিস্থিতি মোকাবিলার দক্ষতা থাকায় সকল যাত্রীর জীবনই বাঁচানো সম্ভব হয়েছে।
ভিডিও ও যাত্রীদের থেকে প্রাপ্ত বর্ণনা থেকে এ ঘটনার একটি সংক্ষিপ্ত ধারণা পাওয়া যায়। আন্তন ডেইবে নামে একজন সুইডিশ ১৭ বছর বয়সী যাত্রী বিমান দুটির সংঘর্ষের পর উদ্ভূত বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির বর্ণনা করেছন। একটি সুইডিশ সংবাদপত্রকে তিনি জানান, "কয়েক মিনিটের মধ্যে পুরো কেবিন ধোঁয়ায় ভরে যাওয়ায় পুরো কেবিন নরকের মত মনে হচ্ছিল। সাথে সাথে আমরা সবাই মেঝেতে লুটিয়ে পড়ি। তারপরে জরুরি দরজা খুলে দেওয়া হয়। এবং আমরা প্রাণ নিয়ে বের হতে সক্ষম হই। বের হয়েই আমরা মাঠের দিকে দৌড়াতে আরম্ভ করি, কোন ধারণাই ছিলনা কোথায় দৌড়াচ্ছি। পুরো বিশৃঙ্খল একটা অবস্থা ছিল।"
যাত্রীদের মোবাইল ফোনেও ওই সময়কার কিছু ভিডিওচিত্র পাওয়া যায়। ভিডিওতে দেখা যায়, বিমানের ইঞ্জিনটি আগুনের উল্কার মত লাল হয়ে জ্বলছিল। ভেতরের কেবিনটি ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন, ক্যামেরার লেন্সকে অস্পষ্ট, যাত্রীরা চিৎকার করছে এবং কেবিন ক্রুরা পরবর্তী নির্দেশনাগুলো যাত্রীদের দিচ্ছেন।
এভিয়েশন বিশ্লেষক অ্যালেক্স মাচেরাস বিবিসিকে বলেন, আগুন প্রাথমিকভাবে ৯০ সেকেন্ডের জন্য প্লেনের একটি নির্দিষ্ট অংশে সীমাবদ্ধ থাকায় পুরো প্লেনে ছড়িয়ে যায়নি। যেকারণে কিছু সময় পাওয়া যায় সবাইকে নিরাপদে সরিয়ে নিতে।
উল্লেখ্য, এয়ারবাস এ-৩৫০ এই এয়ারবাসটি কার্বন ফাইবার দিয়ে বানানো প্রথম যাত্রীবাহী বিমান। যেকারণে এমন সংঘর্ষ ও আগুনকে প্লেনটি ভালোভাবেই সামাল দিতে পেরেছে। এত আগুন সত্ত্বেও, বিমানটি তার কাঠামোগত অখণ্ডতা বজায় রেখেছিল।