একে একে দুইটি মেয়ের লাশ গ্রহণ করলেন বেইলি রোডে ঘটে যাওয়া অগ্নিকান্ডের ঘটনায় দুই মেয়ে হারানো এক অসহায় পিতা। ২৯ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে এমন হৃদয় বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ভবনেয়াগুন নিয়ন্ত্রনের এক পর্যায়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দুই বোনের লাশ উদ্ধার করে তাদের পিতার কাছে হস্তান্তর করেন। এসময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এই পিতা। এক মেয়ের লাশ গ্রহণ করার সময় কান্না জড়িত কন্ঠে "আমার আরেক মেয়ে আসুক, আমার আরেক মেয়ে আসুক" বলে বিলাপ করতে দেখা যায় তাঁকে।
বেইলিতে একসাথে দুই মেয়েকে হারিয়ে অসহায় পিতার আহাজারি





উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ঢাকার বেইলি রোডে বহুতল একটি সুউচ্চ ভবনে আগুন লাগার সংবাদ পাওয়া যায়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌছুতে পৌছুতে আগুন তীব্রতর হয়ে ওঠে। ঘটনায় আহত হন অর্ধশতাধিক এবং এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা গেছে। বেইলি অগ্নিকান্ডের এই ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, সাততলা এই ভবনের দ্বিতীয় তলায় ‘কাচ্চি ভাই’ নামের একটি প্রসিদ্ধ খাবারের দোকান রয়েছে। ভবনের তৃতীয় তলায় একটি পোশাকের দোকান সহ ওপরের তলাগুলোতেও
ছিল কিছু খাবারের দোকান। প্রতক্ষ্যদর্শীদের বরাতে জানা যায়, প্রত্যহ সন্ধ্যার পর থেকেই এই খাবারের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের প্রচুড় ভিড় হয়। খাবারের ব্র্যান্ডে কিছু প্রসিদ্ধ নাম থাকায় অনেকেই পরিবার সহ ভাল কিছু সময় কাটাতে সেখানে খেতে যান। কিন্তু নিহতরা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা আদৌ জানতেন না এই জায়গাটিই তাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে।
এ ঘটনায় আরো নিহত হয় একই পরিবারের পাঁচজন সদস্য। ইতালি প্রবাসী সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার (৪২) সদ্য দেশে এসেছেন তাঁর স্ত্রী সন্তানদের ইতালি নিয়ে যাওয়ার জন্য। এক সপ্তাহ পরেই তাদের ইতালি যাওয়ার কথা। এর মাঝেই পরিবারের সাথে একটু ভাল সময় কাটানোর উদ্দেশ্যে উক্ত ভবনের একটি রেস্টুরেন্টে খেতে আসেন মোবারক। রাত আনুমানিক ৮টার দিকে মোবারক তার স্ত্রী স্বপ্না (৩৮), মেয়ে সৈয়দা তাশফিয়া (১৭), সৈয়দা নূর (১৫) ছেলে সৈয়দ আব্দুল্লাহকে নিয়ে কাচ্চি ভাইতে খেতে আসেন। তারা ঘটনাস্থলে প্রবেশের খানিকক্ষণ পরেই দুর্ঘটনাটি ঘটলে ঘটনাস্থলেই সবাই মৃত্যুবরণ করেন।
জানা গেছে, প্রবাসী মোবারকের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামে। তিনি ঢাকার মগবাজার এলাকায় থাকতেন।